কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন
কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন তা নিচে আলোচনা করা হবে। আপনি যদি জানতে চান যে, কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন সে বিষয়ে তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন তার বিস্তারিত বিবরণ সম্পর্কে।
পোস্ট সুচিপত্রঃ কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন
ভূমিকা
আমরা প্রায় সকলেই হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যায় পড়ি। নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য অনেক সময় আমরা মেকআপ ব্যবহার করি, কিন্তু তবুও হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস বোঝা যায়। যার কারনে চেহারার সৌন্দর্য ঠিকভাবে ফুটে ওঠে না। এটি যেমন একটি সমস্যা, ঠিক তেমনিভাবে এর সমাধানও রয়েছে। আসুন তাহলে দেখে নেই ঘরে বসে কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন।
হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস আসলে কি?
হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস আসলে কি? আমরা ত্বকের যত্নে অনেক কিছু করি তবুও নানারকম সমস্যায় পড়তে হয়। এ সমস্ত সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা। হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস সাধারণত ত্বকের মধ্যে থাকা ছিদ্র সিবাম, মেকআপ, ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা ইত্যাদি ত্বকে জমে থাকলে তৈরি হয়। এগুলো এক ধরনের ছোট ছোট ব্রণ বা ফুসকুড়ি যেগুলো সাধারণত আমাদের কপালে, থুতনি, গালে, আর সবথেকে বেশি নাকে হয়ে থাকে।
যেকোনো ধরনের ময়লার কারণে যখন ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, তখনই এই হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দেখা যায়। এরফলে ত্বকে ছোট ছোট ব্রণ বের হয়। যে সমস্ত ব্রণের মুখ বন্ধ থাকে তাকে হোয়াইটহেডস বলে, আর যে সমস্ত ব্রনের মুখ উন্মুক্ত থাকে সেগুলোকে ব্ল্যাকহেডস বলে। হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস আসলে কি? আশাকরি আপনার উওরটি আপনি পেয়েছেন। হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস একই প্রকৃতির তবে তাদের রং আলাদা হয়ে থাকে। এরা বাতাসের সংস্পর্শে এলে কালো হয়ে যায়। যার কারণে ত্বক অনেক বেশি খারাপ দেখায়।
কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন
কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন, ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি, তার পরেও ত্বকে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা দেখা দেয়। যার কারণে ত্বকের সৌন্দর্য অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়, শত মেকাপের পরেও ত্বকের দাগগুলো বা ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা ব্রণ বোঝা যায়। তবে এগুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর করা সম্ভব আসুন দেখে নেই, কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন। হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলঃ
- উষ্ণ গরম লিকুইড দুধ
- ভ্যানিলা এসেন্স
ভ্যানিলা এসেন্স এর পরিবর্তে আপনারা চাইলে আনফ্লেভারড জেলাটিন ব্যবহার করতে পারেন। ভ্যানিলা এসেন্স অথবা আনফ্লেভারড জেলাটিন এর মধ্যে যেকোনো একটি নিতে পারেন। এগুলো আপনি যে কোন সুপারশপে অথবা বড় কোন মুদি দোকানে পেয়ে যাবেন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে আপনাকে নিতে হবে একটি পরিষ্কার পাত্র, এর মধ্যে নিতে হবে উষ্ণ গরম দুধ এবং ২ চামচ ভ্যানিলা এসেন্স। আর আপনি যদি ভ্যানিলা এসেন্স এর পরিবর্তে আনফ্লেভারড জেলাটিন নিতে চান তাহলে, ২ টেবিল চামচ জেলাটিন নিন। এর মধ্যে অল্প অল্প করে উষ্ণ গরম দুধ মিশিয়ে নিন, খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন খুব বেশি পাতলা বা খুব বেশি ঘন না হয়ে যায়। আবার আপনি চাইলে গরম দুধ, জেলাটিন এবং ভ্যানিলা এসেন্স তিনটি উপাদান মিশিয়ে একটি মাক্স তৈরি করতে পারেন।
প্রস্তুতকৃত পিল অফ মাক্সটি ব্যবহারের নিয়মঃ প্রথমত ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিন, এরপর একটি নরম ও পরিষ্কার তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, তারপর অতিরিক্ত পানিটুকু নিংড়ে ফেলে দিন এবং আপনার ত্বকে গরম তোয়ালেটি হালকা হাতে চেপে চেপে দিন, এভাবে কিছুক্ষণ রেখে দিন। ত্বকে গরম সেঁক দেওয়ার ফলে পোরগুলোর মুখ খুলে যাবে। এরফলে ত্বকের হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস খুব সহজেই উঠে আসতে সাহায্য করবে।
এবার প্রস্তুতকৃত মিশ্রণটি হাতের সাহায্যে আপনার পুরো মুখে লাগিয়ে নিন, বিশেষ করে যে সমস্ত স্থানে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস রয়েছে সেখানে মোটা ভাবে বা পুরুভাবে লাগিয়ে রাখুন। এভাবে আপনি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, পুরোপুরি মাস্কটি শুকিয়ে যাওয়ার জন্য। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর মাস্কটি শুকিয়ে এলে মাস্কটির এক পাশ ধরে আস্তে করে টান দিন এবং মাস্কটি তুলে ফেলুন।
মাস্কটি তুলে ফেলার পর আপনি দেখতে পারবেন যে, আপনার ত্বকের হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস কতটা দূর হয়ে গিয়েছে। মাস্কটির সাথে উঠে যাবে সব ধরনের হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস। এরপর ত্বকে টোনার ব্যবহার করুন। এ মাস্কটি খুব ভালো কাজ করে, তবে হ্যাঁ মনে রাখবেন খুব ঘনঘন ব্যবহার করবেন না। যখন ত্বকে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দেখা দিবে শুধু তখনই ব্যবহার করবেন। তাহলে আপনারা জানলেন কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন।
ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করার উপায়
নিশ্চয়ই আপনি আপনার ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল দেখতে চান, কিন্তু ব্ল্যাকহেডস আর হোয়াইটহেডস এর জন্য ত্বক সুন্দর রাখতে পারেন না। আজ আমরা আপনাদেরকে জানাবো ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করার উপায় গুলি সম্পর্কে। আসুন তাহলে দেখে নেই ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করার উপায় গুলি কি কি।
অ্যালোভেরা জেলঃ এলোভেরা জেলে আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এটি আপনার ত্বকের জন্য খুব উপকারী, এটি ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে পারে এবং আপনার ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয়। যার ফলে ত্বকে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কমে যায়। আর তাই নিয়মিত ভাবে ত্বকে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন, এতে করে ত্বকে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস হওয়ার সম্বাবনা কমে আসবে।
টুথপেস্ট এর ব্যবহারঃ আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে টুথপেস্ট ব্যবহার করে থাকি। সেই সাথে আপনি টুথপেস্ট ব্যবহার করে আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করতে পারবেন নিমিষেই। এর জন্য আপনাকে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস এ আক্রান্ত স্থানে টুথপেস্ট লাগিয়ে নিতে হবে এবং সেটি ৩০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। কিছুদিন ব্যবহারে আপনার ত্বকের ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস অনেকটা কমিয়ে দিবে।
হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস রোধে ত্বকের যত্নঃ
- সব সময়ের জন্য আপনার ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন
- ঘুমোতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন মেকআপ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন
- দিনে অন্ততপক্ষে দুইবার ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন
- নোংরা হাত দ্বারা কখনো মুখ স্পর্শ করবেন না
- মুখ পরিষ্কার করার সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন
- আপনার ব্যক্তিগত জিনিসগুলো কারো সাথে শেয়ার করবেন না যেমন- মেকআপ ব্রাশ
কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেনঃ উপসংহার
আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়, তার মধ্যে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা প্রায় সবারই কম বেশি হয়ে থাকে। কারো কারো খুব বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে, এ সমস্ত হোয়াইটহেডস এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য আপনাকে কোনরকম পার্লার ট্রিটমেন্ট নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ঘরে বসেই হোয়াইটহেডস এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতে পারবেন। এর জন্য নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখুন।
গরম পানির ভাব দিন যাতে লোমকূপ গুলো খুলে যায় এবং মাঝে মাঝে পিল অফ মাক্স ব্যবহার করুন। আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন তার কিছু টিপস নিয়ে। সেগুলো ঠিকমতো ফলো করলে আপনারা কিভাবে হোয়াইটহেডস ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন এই থেকে মুক্তি পেতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন, ধন্যবাদ। ২৫২৪২
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url